ঢাকার মগবাজারের ওয়ারলেস গেট এলাকার শরমা হাউসে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত শিশুসহ সাত জনের মৃত্যু ও চল্লিশ জনের অধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। আজ (২৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৪০মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে দোতলা ভবন উড়ে গেছে।ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট কাজ করছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ( ডিএমপির) কমিশনার শফিকুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।
ডিএমপি কমিশনার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত তারা জানতে পেরেছেন, মগবাজারের শরমা হাউসে গ্যাস বিস্ফোরণ আশপাশের সাতটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছেন মোট সাতজন।
তবে রাত ১১ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিস্ফোরণে তিনজন মারা গেছেন। মগবাজারের একটি ভবনে সন্ধ্যা ৭ টা ৩৪ মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কীভাবে এই বিস্ফোরণ তা জানার জন্য কমিটি গঠন করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, গ্যাস বিস্ফোরণ থেকে এই বিস্ফোরণ। ভবনের নিচতলায় ফাস্ট ফুডের দোকান ছিল। দ্বিতীয় তলায় একটা শো রুম ছিল। সেখানে ফ্রিজ ছিল। তিন তলায় ছিল একটা স্টুডিও। ভবনের সামনের সড়কে কাজ চলছে। সেখানেও গ্যাস ও ইলেকট্রনিক তার রয়েছে। কীভাবে এই বিস্ফোরণ তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মগবাজারের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কের তিনতলা একটি বাড়ির নিচতলা বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, শরমা হাউসে (৭৯/১) সারকুলার রোডে তিন তলা পুরাতন ভবনের নিচ তলায় গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। অনেকে হতাহত হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই বিস্ফোরণে দুটি বাসের যাত্রীরা হতাহত হয়েছেন। অন্তত ৪৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয় ১২ জনকে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পাথর শংকর পাল জানান, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। ভর্তি হওয়া আরও ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের শরীর পোড়া ছাড়াও জখমের চিহ্ন রয়েছে।
এর আগে বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. সাজ্জাদুর রহমান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ৩৬ জনকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী জান্নাত আরা বলেন, ঘটনাস্থলের অদূরে একটি ভবনে নিচে তিন দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিকট তিনি শব্দ শুনতে পান। তিনি যে ভবনের নিচে ছিলেন, সেটির কিছু পলেস্তারা ধসে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ওপর পড়ে। এরপর ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন উড়ালসড়কের ওপরে ও নিচে যাত্রীবাহী বাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাসযাত্রী সৈয়দ ইকবাল হোসেন (৫০) বলেন, বাসটি মগবাজার ফ্লাইওভারের নিচে পৌঁছালে ফ্লাইওভারের ওপরে একটি বাসে আগুন জ্বলতে দেখেন। সেই বাস থেকে চূর্ণবিচূর্ণ কাচ ও আগুনের ফুলকি নিচে পড়তে থাকে। এরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। চেতনা ফিরলে দেখেন তিনি হাসপাতালের বিছানায়।
0 coment rios: