মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১

প্রেমিকার আত্মহত্যার অভিযোগে বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে মামলা


রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাতে গুলশান থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

মামলার বাদী ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান। 

সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান। তাঁদের বাড়ি কুমিল্লার উজির দিঘির পাড়। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দু-এক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মোসারাত।

গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সোমবার রাতে বলেন, ঠিক কী কারণে তরুণী আত্মহত্যা করলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রাতেই তাঁরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করেছেন। 

এজাহারে নুসরাত বলেন, দুদিন পর ২৫ এপ্রিল মোসারাত তাঁকে ফোন করেন। ওই সময় তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাঁকে বিয়ে করবেন না, শুধু ভোগ করেছেন। আসামিকে উদ্ধৃত করে মোসারাত বলেন, আসামি তাঁকে বলেছেন, তিনি (মোসারাত) তাঁর শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মোসারাতকে তিনি ছাড়বেন না। মোসারাত চিৎকার করে বলেন, আসামি তাঁকে ধোঁকা দিয়েছেন। যেকোনো সময় তাঁর বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাঁরা (বাদী নুসরাতের পরিবার) যেন দ্রুত ঢাকায় আসেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, নুসরাত তাঁর আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে দুপুর ২টার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা দেন। আসার পথে বারবার মোসারাতের ফোনে ফোন করেন, কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। গুলশানের বাসায় পৌঁছে দরজায় নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নিচে নেমে আসেন। তাঁরা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষ থেকে বাসার ইন্টারকমে ফোন করেন। পরে ফ্ল্যাট মালিকের নম্বরে ফোন দিলে মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার পরামর্শ দেন। মিস্ত্রি ডেকে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তিনি দেখেন, তাঁর বোন ওড়না পেঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলে আছেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ এসে ওড়না কেটে মোসারাতের মৃতদেহ নামায়। আলামত হিসেবে আসামির সঙ্গে ছবি, আসামির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে লেখা ডায়েরি ও তার ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্র বলছে, আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় ২৬ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টার মধ্যে যেকোনো সময় মোসারাত মারা যান।

বাদী নুসরাত মামলার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। 


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: