শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২

শেয়ার বাজার থেকে Money Make করার কৌশল!! ৫ম পর্ব


সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স
কে এম ‍মিজানুর রহমান

শেয়ার বাজারে বহুল ব্যবহৃত টুলস হলো সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স। কোনও শেয়ারে আটকা পড়ে গেলে কিভাবে বের হবেন? অথবা খারাপ বাজারেও লাভ করার কৌশল কি? জানার জন্য প্রতিটা প্রফেশনাল ট্রেডার এই ট্রেডিং স্ট্রাটেজি ফলো করে। আর ফলো করে না, শেয়ার বাজারে এমন ট্রেডার নেই বললেই চলে, অবশ্য যারা জানেন না তাদের কথা ভিন্ন।
চিত্রঃ ওইমেক্স ইলেকট্রোড

সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স কি? তা আপনাদের শেয়ার বাজারের একটা শেয়ার দিয়ে বুঝিয়ে দেবো
সাপোর্টঃ সাপোর্ট মানে সমর্থন বা সহায়তা করা, শেয়ার ট্রেডিংয়ের ভাষায় কিনতে সহায়তা করা, যখন কোন শেয়ার প্রাইস সাপোর্ট জোনে আসে তখন ঐ সাপোর্ট জোন শেয়ার কিনতে ডিমান্ড তৈরী করে, আর তখনই শেয়ার প্রাইস বেড়ে যায়। সাধারণভাবে সাপোর্ট হলো একটা শেয়ার প্রাইস(ক্যান্ডেল স্টিকস্) যখন কমতে কমতে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় এসে থেমে যায়,আর নিচে নামে না, এই থেমে যাওয়ার জায়গাটাকে বলে সাপোর্ট। সহজে বা সেল প্রেসার খুব বেশী না হলে প্রাইস আর নিচে নামে না।
রেজিস্ট্যান্সঃ রেজিস্ট্যান্স অর্থ প্রতিরোধ করা বা বাধা দেয়া, শেয়ার ট্রেডিংয়ের ভাষায় প্রাইসকে আরো ওপরে যেতে বাধা প্রদান করে, যখন বিক্রি চাপ বেড়ে যায় বা প্রফিট টেক করার প্রবনতা বেড়ে যায়, আর তখনই প্রাইস পড়তে থাকে। তাহলে বোঝা যায় যে সাপোর্ট থেকে প্রাইস যখন আবার বাড়তে বাড়তে উপরের দিকে উঠে যায়, উঠে আগের প্রাইস লাইনের নির্দিষ্ট জায়গায় রেজিস্ট্যান্স বা বাধা পেয়ে নিচে নামতে থাকে। এই ওপরে বাধা পাওয়ার জায়গাটাকে বলে রেজিস্ট্যান্স। এখনে বাই প্রেসার খুব বেশী না থাকলে আর ওপরে উঠতে পারে না বা বায়ারগণ ক্রয় চাপ সৃষ্টি না করলে বাধা ডিঙাতে পারে না।
এটা থেকে কি শিখলাম? দর যখন সার্পোট লাইনে থাকে তখন ক্রয় এবং রেজিস্ট্যান্স লাইনে থাকে তখন বিক্রয়।
দুইটা লাইন টেনে এই সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স জোন চিহ্নিত করা হয়। সাধারণতঃ এই দুই লাইনের মধ্যেই প্রাইস ওঠা-নামা করে
নিচের চিত্রে দেখুন ক্যান্ডেল স্টিকস্ এর সাথে একটা সবুজ লাইন দেয়া হয়েছে, ওইটা হলো প্রাইস লাইন। প্রাইস লাইন একবার ওপরে উঠছে আরেকবার নীচে নামছে। ওপরে যেখানে বাধা পাচ্ছে সেটা রেজিস্ট্যান্স লাইন আর যখন নীচের লাইনে বাধা পাচ্ছে সেটা হলো সাপোর্ট লাইন।
এর আগে আমি শিখিয়েছি investing.com ওয়েব সাইট থেকে কিভাবে কোনো শেয়ারের চার্ট আনতে হয় এবং প্রাইস(ক্যান্ডেল স্টিক) দেখতে হয়। না দেখে থাকলে কৌশলগুলো দেখে আসতে পারেন।
এখন প্রশ্ন হলো শেয়ার দর ঐ(সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স) লাইন ভেঙ্গে কি ওপরে ওঠে না বা নীচে নামে না? এক কথায় উত্তর হ্যাঁ ওঠে বা নামে।
নিচের চিত্রটি দেখুন রেজিস্ট্যান্স লাইন ভেঙ্গে দর ওপরে উঠে গেছে এবং দর আরও বাড়ছে। বা অরও বাড়বে।

চিত্র-১ঃ আপট্রেন্ডে সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স জোন।


ওপরে যে চার্টটা আমরা দেখছি তা Aamra technologies Ltd-এর ডেইলি চার্ট এবং investing.com ওয়েব সাইট থেকে নেওয়া, এটা একদম ফ্রি ভার্সন। যা বের করা থেকে এর ব্যবহার করা পর্যন্ত আগে আপনাদেরকে দেখিয়েছি।
ব্রেক আউটঃ অনেক সময় প্রাইস অনেক আগের (সাপ্তাহিক ক্যান্ডেল স্টিক) হাই প্রাইসকে টপকে রেজিস্ট্যান্স লাইন ভেঙ্গে ওপরে উঠে যায় তখন তাকে বলা হয় ব্রেকআউট। এ সময় কেনার প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয় অর্থাৎ বড় ভলিয়মে দর বেড়ে যায়, এক কথায় নিউট্রিনো শক্তি পায়। তখন দর কমপক্ষে ৪০% বেড়ে যায়, সর্বোচ্চ  আনলিমিটেড, এ শেয়ারটা দেখুন খুব ছন্দ মেনেই আপট্রেন্ডে আছে এবং আগের হাই প্রাইসকে ব্রেকআউট করেছে (ওপরের ভূমি বরাবর রেখাটা) এর অর্থ এ শেয়ারটার প্রাইস আরও বাড়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। কিছু নিয়ম মেনে এখানে ক্রয় করা যেতে পারে। যদিও দর বা প্রাইস অনেক বেড়েছে।
ঠিক সে রকমই যখন ‍সাপোর্ট লাইন ভেঙ্গে শেয়ার প্রাইস নীচে নেমে যায় তখন আর ক্রয় নয় বরং কোন শেয়ার হাতে থাকলে তা বিক্রী করে দেয়া উচিৎ। (চিত্র-২ দেখুন, ডাউনট্রেন্ডে সাপোর্ট রেজিস্ট্যন্স)
সাধারণতঃ সাপোর্ট লাইনে ক্রয়, রেজিস্ট্যান্স লাইনে সেল সেটার ডিরেকশন উর্ধ্বমূখী, নিম্নমূখি, বা ভূমি বরাবর যে ডিরেকশনেই থাকুক না কেনো।
খারাপ বাজারেও শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ঃ বলছিলাম খারাপ বাজারেও শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়, কিভাবে? নিশ্চয়ই এতোক্ষণে বুঝে গেছেন। বাজার ডিরেকশন যেদিকেই হোক, সাপোর্ট জোনে ক্রয় রেজিস্ট্যান্স জোনে বিক্রয়, কারণ টাকা হাতে বসে থাকা কিন্তু খুবই কষ্টকর।
যারা শেয়ার কিনে আটকে পড়েছেনঃ যারা শেয়ার কিনে আটকে পড়েছেন তারা বসে বসে মজা দেখবেন? আপনি কি আবার সেই আগের দরের অপেক্ষা করবেন? সে গুড়ে-বালি, সেই দর কবে আসবে? তা কি আপনি জানেন? সেটা হতে পারে সপ্তাহ, মাস বা বছরের পর বছর তাহলে উপায়? উপায় হলো আগে কি দরে শেয়ার কিনেছেন তার কথা একদম ভুলে যেতে হবে, এর পর রেজিস্ট্যান্স লাইনে বিক্রয় আর সাপোর্ট জোনে ক্রয় করে লস কভার করে ঐ শেয়ার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আবারও বলছি সব শেয়ার কিন্তু একই নিয়ম ফলো করে না, কোন্ নিয়ম ফলো করে? তা জানতে হবে।


চিত্র-২ঃ ডাউনট্রেন্ডে সাপোর্ট রেজিস্ট্যন্স (আমি জাস্ট ওপরের চিত্রটাকে উল্টিয়ে দিয়েছি)

প্রাইস যখন ডাউন ট্রেন্ডে থাকে তবে সেটার প্রাইস আরও নিচের দিকে নামতে থাকে। তখন সেল বা না কেনা উত্তম। এখন প্রশ্ন হলো সব শেয়ার দর কি এই নিয়ম মেনে চলে? না একই নিয়ম মেনে চলে না, অন্য কোন প্যাটার্ন তৈরী করে আর এই প্যাটার্ন সম্বন্ধে যদি ধারাণা না তবে সে শেয়ার না কেনা উত্তম।
ডিরেকশনঃ ডিরেকশন তিন রকমের ১। আপট্রেন্ড, ২। ডাউনট্রেন্ড এবং ৩। সাইডওয়ে
শেয়ার বাজারে প্রচলিত কথা ’ট্রেন্ড ইজ ইওর ফ্রেন্ড’ তাই কোনো শেয়ার কেনোর আগে দেখবেন ট্রেন্ড। ট্রেন্ড কি? ট্রেন্ড মানে প্রবণতা, একটা নির্দিষ্ট দিকে শেয়ার দর বেড়ে বা কমে যাওয়ার প্রবণতা।
আপট্রেন্ডঃ ঐ যে সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স লাইনগুলো দেখছেন ঐ লাইনগুলো যদি উর্ধ্বমূখী থাকে সেটাকে বলে আপট্রেন্ড।
ডাউনট্রেন্ডঃ সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স লাইনগুলো লাইনগুলো যদি নিম্নমূখী থাকে সেটাকে বলে ডাউন ট্রেন্ড, এক্সপার্ট না হলে ডাউনট্রেন্ডে ক্রয় না করা ভালো।
যদি আপট্রেন্ডে থাকে তবে সাপোর্ট লাইনে বাই(ক্রয়)।
চিত্র-৩ঃ ডিরেকশন যখন সাইডওয়েতে
সাইডওয়েঃ কোনো শেয়ার প্রাইসের ট্রেন্ড লাইন যদি ভূমি বরাবর থাকে তাকে সাউডওয়ে বলে। এ সময়ে শেয়ার প্রাইস কোন্ দিকে মুভ করে সেটা দেখে ক্রয়-বিক্রয় করার উচিৎ। ওপরের দিকে গেলে ক্রয়, নিচের দিকে গেলে বিক্রয়। যতদিন সাইডওয়েতে থাকে ততোদিন শেয়ার কেনা থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আরো জানতে ক্লিক করুন 
DSE Money Maker গ্রুপে


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: