মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১

পিপলস লিজিং চালু করার উদ্যেগ নিয়েছে বিএসইসি

 

পিপলস লিজিং নিয়ে যে সব বিনিয়োগকারী আটকে আছেন তাদের উৎকণ্ঠার শেষ নাই, বিএসইসিও আঠার মতো লেগে আছে এই সংস্থার পিছনে। এর মধ্যে গত সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের পর্ষদের সঙ্গে বিএসইসি এক বিশেষ বৈঠক করেছে। 

বৈঠকে পিপলস লিজিং চালু করার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বিএসইসি। বিএসইসির ৮০০ তম কমিশন সভায় আজ (২৩শে নভেম্বর) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে পিপলস লিজিংয়ের ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের আর্থিক বিবরণী এবং অন্যান্য কার্যক্রমের উপর বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সেইসঙ্গে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পুনর্গঠনে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করা হবে। 

অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারেনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এর প্রভাব পড়ে পুরো আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে, যা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

এই কারণে পিপলস লিজিংকে নতুন করে পুনর্গঠন করতে চাইছে সরকার। তবে ঠিক কত দিনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না, তবে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এদিকে পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ চিহ্নিত করতে কাজ শুরু হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অবসায়নের প্রক্রিয়া। আর আমানতকারীরা এখনো ঘুরছেন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার দ্বারে দ্বারে। ফলে যাঁরা পিপলস লিজিংয়ে টাকা জমা রেখেছিলেন, তাঁরা পড়েছেন বিপদে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুন (সোমবার) আলোচনায় আসা আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকে পুর্নগঠন বা পুনরুজ্জীবিত করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য একটি বোর্ডও গঠন করে দিয়েছেন আদালত। তবে বোর্ডে কারা থাকছেন তা লিখিত আদেশে জানা যাবে।

জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা, এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ।

২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেয় কোম্পানিটি। খেলাপি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারেনি তারা। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত।

এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়।

পরে সাময়িক অবসায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সূত্রঃ প্রথম আলো, অর্থসূচক


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: